স্টাফ রিপোর্টার
প্রাকৃতিক বনের পরিবেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি শালবন দখলের হিড়িক পড়েছে।ক্ষমতাসীন কিছু অসাধু ভূমিদস্যু ও দালালদের হাত ধরে দখল হচ্ছে শালবনের মহা-মূল্যবান জমি। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দখলদারদের সাথে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই দখল হচ্ছে মূল্যবান শাল বনের জমি।তবে জমি উদ্ধারে এবং দখল ঠেকাতে অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাদের উদাসীনতার অভিযোগ ও রয়েছে। সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায় ঢাকা বন বিভাগের কালিয়াকৈর রেঞ্জ আওতাধীন কাশিমপুর বিটের বিভিন্ন এলাকায় শালবনের জমি দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন,বাড়িঘর, দোকানপাট।এছাড়াও নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে বনের সীমানা ঘেষেও নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা।বনের আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের পাশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে বন বিভাগ থেকে অনুমতি ও জমির সীমানা নির্ধারণের নিয়ম থাকলে ও তার কোনটি মানা হচ্ছে না।শুধু স্থানীয় লোকজন নয়,প্রতিনিয়তই বিভিন্ন মিল কারখানা ও ঝুট গুদামের দখলে ও চলে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বনের জমি। রাতের আধাঁরে সংরক্ষিত বনের গাছ কেটে ওই সব মিল কারখানার যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করার অভিযোগও রয়েছে।এদিকে কাশিমপুর বন বিটের দক্ষিণ বাগবেড় মৌজার মাধবপুর এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে মাহবুবুল আলম গং বিরুদ্ধে বনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।জানা যায় মহানগরীর কাশিমপুরের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাগবেড় মৌজার সিএস ৫৩ দাগ ও আরএস ১৪৯,১৫০,১৫১,১৫২,১৫৩,১৫৪ এবং ১৫৫ দাগের মাঝে একই দাগেই বন বিভাগের সম্পত্তি এবং জোত সম্পত্তি।এছাড়াও আরো জানা যায়,গাজীপুরের টঙ্গী রাজস্ব সার্কেল এর সহকারী কমিশনার(ভূমি)কার্যালয়ে মাহবুবুল আলম গং রা গত ০৭/০৯/২০২৩ তারিখে সীমানা নির্ধারণী মোকদ্দমা নং-১৫/২৩ দায়ের করলেও গত ২৭/০৯/২০২৩ তারিখে শুনানি হয়।কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল না হলেও স্থানীয় বিট কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করেই কোন প্রকার ডিমারকেশন ছাড়াই বনের ৫০ শতাংশ জমি,জবরদখল করে সুউচ্চ সীমানা প্রাচীরসহ শের্ট করে ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়েছে।যার বর্তমান বাজারে জবরদখলকৃত সম্পত্তির বাজার মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
জবরদখলের বিষয়ে মাহবুবুর আলম গং এর উওরাধিকারী মামুন মন্ডলের মুঠোর ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে সাবেক কাশিমপুর বিট কর্মকর্তা বনী শাহাদাত হোসেন জানান,আপনি যে ফ্যাক্টরি কথা বলছেন,আমার সময়ে ওই ফ্যাক্টরির ডিমারকেশন চলমান রেখে চলে এসেছি,আমি চলে আসার পরে ডিমারকেশন ব্যাপারে শুনানি করেছেন সুলাইমান সাহেব।আর আমার সময়ে ওই ফ্যাক্টরি নির্মাণ কাজ করা হয়নি,এর পরে কি হয়েছে আমার তা জানা নেই। এছাড়াও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার ডিমারকেশন এর আদেশ না পেয়ে ফ্যাক্টুরী নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই,এখন কিভাবে তারা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার আদেশ ছাড়াই ফ্যাক্টরিটা নির্মাণ করলো তা বলতে পারছিনা।
স্হানীয় কাশিমপুর বিট কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন বলেন,ওই ফ্যাক্টরির বিষয়ে উচ্ছেদ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।আর আপনি এগুলো জেনে কি করবেন,আপনি নিউজ করে যা করতে পারেন করেন গা"আপনি যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক,সেই বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল আমি মিয়া।কথা বলতে বলতে তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রতিবেদকের সাথে অসাধু-আচরণ করেন তিনি।
ফ্যাক্টরি বিষয়ে সাবেক কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম দোলন বলেন,আমি যখন কালিয়াকৈর রেঞ্জের দায়িত্বে ছিলাম,তখন ওই ফ্যাক্টরি মালিক পক্ষের মামুন মন্ডল আমার কাছে একাধিকবার গিয়েছে,তাদেরকে কোন কর্ণপাত করিনি।তবে তারা আমার পরামর্শে ডিমারকেশনের আবেদন করেছে। আমি ও সাবেক বিট কর্মকর্তা বনি শাহাদাতের আমলে এই ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হয়নি।আমি চলে আসার পরে হয়তো বা ফ্যাক্টরি নির্মাণ হতে পারে।তাছাড়া ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হলো,বর্তমান বিট কর্মকর্তা কেনো অ্যাকশনে যাচ্ছেন না।
এবিষয়ে সহকারী বনসংরক্ষক(এসিএফ)ও কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহিদুল হাসান শাকিল বলেন,আপনাদের তথ্যের মাধ্যমে এ বিষয়টি জানতে পারলাম।কেউ যদি বনের জমিতে ফ্যাক্টরি নির্মাণ করে থাকে। তাহলে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।বনের জমির থেকে জবরদখল উচ্ছেদ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
<p>সম্পাদক ও প্রকাশকঃ</p><p>নাজমুল হুদা বাশার </p><p>০১৭১১২৫৩৬৭৬</p><p><br></p>
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫