মো লুৎফুর রহমান রাকিব স্টাফ রিপোর্টার।
মাটি ব্যবসায়ীর ভারি যানে ভেঙে গেছে গ্রামের চলাচলের সড়কে অবস্থিত দুইটি কালভার্ট। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও শ্রমিকসহ গ্রামবাসী। এমনই ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের নানকরা ও লুদিয়ারা গ্রামে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর পক্ষে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে এক মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বাতিসা ইউনিয়নের নানকরা গ্রামে ভিনটেক সুজ লিমিটেডের সামনের সড়কে মার্চের প্রথম সপ্তাহে মাটি কাটার ভেকু ও মাটি ভর্তি ড্রাম ট্রাক চলাচলের সময় কালভার্টটি পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়। এতে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে গ্রামবাসী ও দুইটি ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা। বন্ধ হয়ে যায় কালিকশার দারুল উলুম মাদ্রাসা, কাশেমুল উলুম মাদ্রাসা, হালিমা ছাদিয়া মহিলা মাদ্রাসা, কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়, কুলিয়ারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লুদিয়ারা নেজামিয়া মাদ্রাসা ও লুদিয়ারা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নানকরা গ্রামের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত। স্থানীয়রা মাটি ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন মুন্নাকে কালভার্ট নির্মাণ করে দেয়ার জন্য বললে সে এ বিষয়ে কর্ণপাতও করেনি বলে জানান তারা।
নানকরা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম জানান, রমজান মাসের প্রথম দিকে চিওড়া ইউনিয়নের সুজাতপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বাতিসা ইউনিয়নের আমজাদের বাজারের পাশে অবস্থিত মাইমুনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সালাহউদ্দিন মুন্না রাতে ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি পরিবহনের সময় কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়ে। তাকে বারবার বলার পরও সে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
একই গ্রামের সুজন নামের একজন বলেন, ‘ফুটবলে সারাদেশে পরিচিত মোনায়েম মুন্না, আর মাটি ব্যবসায় চৌদ্দগ্রামে পরিচিত সালাহউদ্দিন মুন্না। তাকে চৌদ্দগ্রামে মাটি ব্যবসার কিং বলে জানে সবাই। তার মালিকানাধীন রয়েছে মাটি কাটার কাজে প্রয়োজনীয় সকল যানবাহন; এবং কি পরিমাণ যানবাহন রয়েছে সেই হিসেবেও কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারবেনা। পুরো চৌদ্দগ্রামে মাটি কাটার যানবাহন সরবরাহ করে থাকেন এই মুন্না। যে কোনো সমস্যায় টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলে সবাইকে। এই কালভার্টের ক্ষেত্রেও হয়েছে তাই’।
ভুক্তভোগীদের পক্ষে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করা কামরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, কালভার্ট ভাঙার পর এলাকাবাসীসহ সবাই মৌখিকভাবে মাটি ব্যবসায়ী মুন্নাকে কালভার্ট নির্মাণের জন্য বলা হলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। সে মাটি পরিবহনের সময় নানকরা গ্রাম ও লুদিয়ারা স্কুলের সামনের কালভার্ট দুটি ভেঙে যায়। চলাচল ভোগান্তিতে অন্তত চার গ্রামের শিক্ষার্থীসহ সবাই।
লুদিয়ারা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিব্বির আহমেদ বলেন, ‘বিদ্যালয় সংলগ্ন ভাঙা কালভার্টে পড়ে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ব্যথা পায়। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত কালভার্ট মেরামতের অনুরোধ জানাই’।
অভিযোগের বিষয়ে মাটি ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন মুন্নার ব্যবহৃত মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন বলেন, ‘এলাকার পক্ষ থেকে সালাউদ্দিন মুন্নাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আজ বুধবার অভিযোগের শুনানি রয়েছে। শুনানি শেষে বিস্তারিত বলা যাবে’।
<p>সম্পাদক ও প্রকাশকঃ</p><p>নাজমুল হুদা বাশার </p><p>০১৭১১২৫৩৬৭৬</p><p><br></p>
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫