পুড়ে ছাই 4 টি মোটরসাইকেল,ফ্রীজসহ মূল্যবান মালামাল

- আপডেট সময় : ১২:৪০:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫ ১২৯ বার পড়া হয়েছে

বাগেরহাট সদরের বিষ্ণুপুর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিকে কেন্দ্র করে হামলা
৮টি বসতবাড়ী অগ্নি সংযোগ সংযোগ নারীসহ উভয় পক্ষেরআহত ২৫
মোঃ সোহরাব হোসেন রতন,বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটে সদরের চিরুলিয়া বিষ্ণুপর বিএনপি’র ওয়ার্ড কমিটিকে কেন্দ্র করে একই দলের রুহুল মেম্বর গ্রুপের ৮ বাড়িতে আগুন দিয়েছে প্রতিপক্ষ মাসুম মোল্লা ও মোস্তাফিজ মোল্লাগ্রুপ। উভয় পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। বুধবার(০৮জানুয়ারি)সন্ধ্যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কুলিয়াদাইড় গ্রামে হামলা,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের এই ঘটনা ঘটেছে। এর আগে বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়,৫আগস্টের পর থেকে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল আমিন ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ দেখা যায়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোক জনের মাঝে একাধিক বার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে গত 6 জানুয়ারী সোমবার রাতে কুলিয়াইড় ভিআইপি মেড়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিট ও মোটরসাইকেল ভাংচুরের মাধ্যমে এই হামলার অভিষেক হয়। এত মোস্তাফিজ গ্রুপের পাচজনআহত হয়।
ওই ঘটনার জেরে বুধবার দুপুরে ও বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনার এক পর্যায়ে সন্ধ্যার পর মোস্তাফি ও মাসুমের নেতৃত্বে শ্যকরা মুলঘর ও বারুই পাড়ার শতাধিক লোকজন রুহুল মেম্বর ও তার ৭ ভাইয়ের বাড়িতে হামলা,ভাঙচুর,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।এ সময় 5 টি বসতঘর, 4টি রান্না ঘর,2টি গোয়াল ঘর,2টি জ্বালানী কাঠের ঘর এবং ঘরে থাকা ফ্রিজ,,আলমিরাসহ মূল্যবান জিনিস পত্র আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। লুটে নেয় নগদ টাকা, স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান মালামাল।
আগুন নেভাতে যেয়ে, শেখ ছায়েল উদ্দিন(60) মোহাম্মদ শেখ(55) কামরুল শেখ(53), নজরুল শেখ(50) মনি শেখ(48) ইসমাইল শেখ(45) ইসমাল এর স্ত্রী(24)হেণা আক্তার (33) মনিরা বেগম(45) রুহুল আমিন(62)সহ আরো অনেকে পতিপক্ষের ইটের আঘাতে জখম হয়। এর মধ্যে ছায়েল উদ্দিন এর অবস্থা আশঙ্কা জনক তাকে খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রতি পক্ষের প্রতিবাদের মুখে মোস্তিাফিজ গ্রপের মোহ্ম্দ মোল্লা(45), তুহিন(35) কেরামত(54) ও মামুন(38) রুহুল মেম্বার গ্রুপেরলোকজনের হামলায় জখম হয়। এর মধ্যে মামুনের শঙ্কা জনক।
স্থা্নীয় ও প্রত্যক্ষদর্শিরা বলছে, হামলার স্থান থেকে একটু অদুরেই চিরুলিয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজের সামনের ব্রিজের উপর পুলিশ ও সেনা বাহিনীর উপস্থিতিস থাকলে ও ওই মূহূর্তে প্রশাসনের কোন দল হামলা কারিদের নিভৃত করতে যায় নাই।
রুহুলের পরিবারের সদস্যরা জানান,কয়েক দিন ধরে মোস্তাফিজের লোকজন আমাদেরকে মারধরের চেষ্টা করছিল। এর জন্য আমাদের পুরুষরা গা ঢাকা দিয়েছিল। পুরুষরা বাড়ী না থাকায় তারা বাড়ীর মধ্যে এসে আমাদের সবশেষ করে দিয়ে গেল। রুহুল মেম্বর স্ত্রী রজিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী রুহুল আমিন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হতে চায়।এটাই আমাদের দোষ,আর এ কারণেই প্রতিপক্ষরা আমাদের উপর হামলা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ইমরান,কামরান, মাহবুব, মাসুমসহ বহিরাগত 2শ থেকে আড়াইশো লোকজন তাদের বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
রুহুল মেম্বরের ছোট বোন ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমার ভাই তালিম ভাইয়ের গ্রুপ করিছিলো। প্রতিপক্ষরা বাড়িতে হামলা করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদেরও রক্তাক্ত জখম করেছে। আমরা বলেছি, ঘরে শিশুরা আছে, তাও কোন ছাড় দেয়নি, আগুন দিয়ে দিছে।পুলিশ-আর্মি দাড়ায়ে রইছে, আমাদের বাড়ি পোড়ায়ে দেল, কোন সাহায্যই করেণি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ফোন করা হলে তার মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আগের দিনের ঘটনা নিয়ে গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন,রুহুল মেম্বরের ভাই আওয়ামী লীগের ক্যাডার শেখ রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে সোমবার রাতে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী ঢাল শড়কি ও ধারালো দা লাঠি নিয়ে হামলা চালিয় আমাদের ৫ নেতা কর্মীকে আহত করে। এসময় তারা আমাদের ৫টি মটর সাইকেল ও একটি অটো গাড়িসহ একটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে।
মোস্তাফিজুর রহমান গ্রুপের নেতা বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাসুম মোল্লা বলেন, সোমবার রাতে ভাংচুর করা মোটরসাইকেল নিয়ে আজ দুপুরে থানায় যাচ্ছিল, আমার ভাই মামুন মোল্লা। তখন রুহুল মেম্বরের লোকজন তার উপর হামলা করে। আমরা তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলাম। এরই মধ্যে বিকেলে আমার আরেক ভাই মাহমুদ মোল্লাকে কুপিয়ে রাস্তার উপর ফেলে রেখে যায় প্রতিপক্ষরা। সন্ধ্যার দিকে তারা ঢাল শরকি নিয়ে আবারও বের হয়, তখন পুলিশও ছিল। এসময় আমাদের লোকজন তাদেরকে ধাওয়া করে, পরে তারা নিজেরা বাড়িতে আগুন দেয়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ তৌহিদুল আরিফ বলেন, বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। গেল পরশুও মারামারি হয়েছে। এর জেরেই আজ দুইপক্ষে আবার মারামারি করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত্য কোন পক্ষ কো আভিযোগ দায়ের করে নাই।#