লাইলাতুল বারাআত বা মুক্তি ও সৌভাগ্য রজনী হিসেবে পরিচিত শ্রাবণ মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে ক্ষমা করেন এবং মৃতদেরকে ক্ষমা করেন।

- আপডেট সময় : ০৪:০৩:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৬৫ বার পড়া হয়েছে

লাইলাতুল বারাআত বা মুক্তি ও সৌভাগ্য রজনী হিসেবে পরিচিত শ্রাবণ মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত। এ রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে ক্ষমা করেন এবং মৃতদেরকে ক্ষমা করেন।
- মোঃ রুহুল আমিন ভূঁইয়া (স্টাফ রিপোর্টার ফরিদপুর)
রাসূলুল্লাহ সাঃ আজকের রাত সম্পর্কে বলেন, আজকে রাত্রি হল অর্ধ সাবানের রাত। মহান আল্লাহতালা অর্ধ সাবানের রাতে তার বান্দার সব প্রার্থনা মনোযোগ সহকারে শুনেন। যারা ক্ষমাপ্রার্থী তাদের পাপ ক্ষমা করে দেন। আর যারা অনুগ্রহ প্রার্থী তাদের অনুগ্রহ করেন, তাদের বরকত প্রদান করেন। আর যারা বিদ্বেষ পোষণকারী, তাদের ক্ষমা না করে তাদের নিজের অবস্থানেই ছেড়ে দেন। ( শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩৮২-৩৮৬)
ফজিলতের কারণে মুসলিম বিশ্বে জাতটি বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়। অনেকেই মসজিদে গিয়ে ইবাদত করেন, তেলাওয়াত করেন এই রাতের ইবাদত নিয়ে বেশ কিছু ভুল প্রচলন হয়েছে। তাই এই রাতের ইবাদত সম্পর্কিত করনীয় এবং বর্জনীয় বিষয়ে তুলে ধরা হলো –
শবে বরাতের করনীয়ঃ
>> এশার ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা উচিত এই রাতে। এই রাতে আমরা অনেকেই নফল ইবাদতে মগ্ন থাকি, রাত জেগে নফল ইবাদতের ফলে ফজর নামাজ পড়া হয় না। অথচ নফল ইবাদতের থেকে ফরজ ইবাদত অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কোন ব্যক্তি ঈসা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করলে তিনি পুরো রাত নফল ইবাদতের সওয়াব পান।
>> নফল নামাজ পড়া যেতে পারে, যেহেতু রাত্রি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এই রাতে নফল নামাজ পড়েছেন, তাই আমরাও রাত্রি নফল নামাজের মাধ্যমে কাটাতে পারি
>> তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যেতে পারে। নফল ইবাদত হিসেবে তাহাজ্জুদ নামাজ প্রতি রাতেই পড়ার নিয়ম। তবে ইবাদতে অভ্যস্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের জন্য বছরের অন্যান্য রাতগুলো তাহাজ্জুদ পড়া কিছুটা কষ্টকর। তাই তারা এই রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারেন।
>> আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারেন এই পবিত্র রাতে। আল্লাহতালার কাছে দোয়া করলে তা কবুলের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য নিজের ও অন্যের সমস্যা, প্রয়োজন নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত।
শবেবরাতে রোজা রাখবেন যেভাবেঃ
>> তওবা ও ক্ষমাপ্রার্থনা। মানুষ হিসাবে আমরা প্রতিনিয়ত গুনাহ করে ফেলি, গুনাহের পর তাৎক্ষণিক তওবা করার নিয়ম। আমরা অনেক সময় অবহেলা করে তওবা করি না। এই রাতে তওবা করে গুনাহ থেকে মাফ চাওয়া উচিত। তওবা নামাজ পড়া যেতে পারে অথবা সরাসরি দোয়ার মাধ্যমে তওবা করা যেতে পারে। তবে নামাজের পরে তওবা বেশি কার্যকরী।
>> কোরআন তিলাওয়াত করা যেতে পারে। কোরআন তিলাওয়াত মানুষকে আল্লাহ তায়ালার নিকটবর্তী করে। ফজিলত পূর্ন এই রাত তিলাওয়াতে কাটানো উত্তোম।
শবেবরাতে বর্জনীয়ঃ
>>শবে বরাত পূর্ণময় রজনী। এ রাত ইবাদতের মাধ্যমে কাটাতে হবে। হাদিসে বর্ণিত নেই এমন কোন কাজ করা যাবে না এই রাতে এবং যেকোনো ধরনের নোংরা ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
>> শবে বরাতের মত পূন্যময় রাতে আতশবাজি, পটকা ফোটানো যাবে না।
>> কেউ চাইলে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে এই দিনে ভালো খাবার তৈরি করা জরুরী মনে করা যাবে না।
>> ইবাদত বাদ দিয়ে হালুয়া রুটি তৈরি করা অনুচিত। এ রাতে যেমন ইবাদতের স্বভাব রয়েছে ঠিক তেমনি গর্হিত কাজেরও শাস্তি রয়েছে।
>> এ রাতে বাড়িঘর, মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনা আলোকসজ্জা থেকে বিরত থাকা উচিত। আল্লাহ সুবহানুতায়ালা বলেন, ” তোমরা অপচয় করো না, নিশ্চয়ই অপচয় কারী শয়তানের ভাই “। (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৭)
>> পুরো রাত নফল ইবাদতে কাটিয়ে ফজর নামাজের মত ফরজ ইবাদত কাজা করা যাবে না।
ডিবিসি / কেএলডি