ফরিদপুরে একাধিক চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করলেন বুলবুল

- আপডেট সময় : ০৬:২৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫ ১০ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদকঃ নাজমুল হুদা বাশার
ফরিদপুর সদর উপজেলার দৈওরা কৈজুরী গ্রামে নিজ শয়ন কক্ষে আত্মহত্যা করেছেন নুরুজ্জামান বুলবুল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সুইসাইড কক্ষের দেয়ালে লেখা আছে-বিল্লাল ভাই আমাকে আর বাঁচতে দিলেন না ও আক্কাস আলী (মেঝ মেয়ের শশুর) নামে আরও এক আওয়ামীলীগ নেতার নাম লিখে আত্মহত্যা করেন বুলবুল। এছাড়াও একটি চিরকুটে তিনি লিখেছেন- মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে। এ সময় মরদেহের পাশে একাধিক চিরকুট ও দেয়ালে লেখা নোট পাওয়া গেছে।গতকাল সোমবার বিকাল অনুমান তিন টার সময় দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে কোতয়ালী থানা পুলিশ।জানা যায় বুলবুল কৈজুরি গ্রামের মৃত মোজাফফর হোসেন রাঙা মিয়ার ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাঁর স্ত্রী ও তিন কন্যাসন্তান রয়েছে। পৈতৃক ওই বাড়িতেই পরিবারসহ বসবাস করতেন তিনি। চার বছর আগে তার বাবা এবং গত বছর তার মা মারা যান।পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল রোববার দুপুরে বুলবুল নিজ কক্ষে প্রবেশ করেন। দীর্ঘ সময় সাড়া না পেয়ে সোমবার বিকেলে দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তাঁরা। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কক্ষ থেকে একাধিক চিরকুট ও দেয়ালে লেখা নোট উদ্ধার করা হয়েছে। দেয়ালে লেখা একটি বার্তায় বলা হয়েছে, ‘বিল্লাল ভাই আক্কাস আমারে বাঁচতে দিলেন না।
স্থানীয়দের ধারণা, চিরকুটে উল্লেখিত আক্কাস নামটি আক্কাস হোসেনকে উদ্দেশ্য করে লেখা, যিনি বুলবুলের মেজো মেয়ের শ্বশুর এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি। তাঁর ছেলে ফাহিম আহমেদ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।তবে বিল্লাল ও আক্কাস দুইজন ই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন এদের সাথেই চলাফেরা এবং ব্যাবসা বাণিজ্য ছিল বুলবুল আত্মহত্যার আগে কেন এই দুই নেতার নাম লিখে আত্মহত্যা করলেন এটা জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে।
আরেকটি চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আল্লাহপাক যদি আমার মৃত্যু দেয়, তাহলে আমার মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে আর আমার কবর যেন আমার মায়ের পাশে হয়, এ বাড়িতে নয়।’নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুলবুলের মেজো মেয়ের প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর তাঁর বিয়ে হয় ছাত্রলীগ নেতা ফাহিমের সাথে।এই বিয়ে নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর আগেও তিনি ঝগড়া এড়াতে কিছু সম্পত্তি মেয়েদের নামে লিখে দিয়েছিলেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ‘চিরকুট ও দেয়ালের লেখাগুলো আমরা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাবে দেখছি। তার আত্মহত্যার পেছনে একাধিক কারণ পাওয়া গেছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। আরও জানা যায় বিল্লাল হোসেন ও বুলবুল ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন তাদের ব্যবসা নিয়ে ও ঝামেলা চলছিল। এই আত্মহত্যা সম্পর্কে বুলবুলের বড়ো ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- বুলবুল অনেক টাকার দেনা দায়েগ ছিল এবং মোবাইল ফোনে আসক্ত ছিলো বলে জানান। এবিষয়ে বুলবুলের স্ত্রী ও কন্যার কাছে জানতে চাইলে তারা কোন কিছু বলতে নারাজ।
তথ্য সুত্রে আরও জানা যায় মুন্সীবাজারে বিল্লাল ও বুলবুলের চারতলা একটি ভবন নিয়েও তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।