ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মানেই দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি

- আপডেট সময় : ০২:৫৪:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫ ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

গালিব মাহাবুব, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মানেই দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি
গালিব মাহাবুব, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
ফরিদপুর সরকারি হসপিটালে রোগী নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই টিকেট নিতে হয়। টিকেট এর দাম ১০টাকা, টিকেট নেওয়ার পর যদি রোগীকে ভর্তি করাতে হয়,তাহলে দিতে হবে ২০ টাকা অথচ লেখা আছে ১৫ টাকা। তারপর টিকেট নিয়ে রোগীকে হুইল চেয়ারে করে ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে ১০০টাকা, আর রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে ট্রলি নিলে গুনতে হবে ২০০ টাকা। ওয়ার্ডে রোগীর সাথে একজনের বেশি প্রবেশ করলে, জন প্রতি গুনতে হবে ২০ টাকা। আবার ৫০ টাকা হলে আপনি পেয়ে যাবেন বেড। আর যদি টাকা না দিতে পারেন, তাহলে ফ্লোরে থাকতে হবে বেড থাকা সত্বেও, অতঃপর রোগীকে ভর্তির কার্যক্রম শেষ করে,খাবার ও ওয়াশরুমের পরিবেশ খুবই বাজে যারা থাকে তারাই শুধু জানে আর মুখ বুজে সবকিছু সহ্য করে, এবার আসুন ডাক্তারের পালায়। ডাক্তার আসবে রোগী দেখবে,তারপর শুরু হবে পরীক্ষা। প্রথমে কমপক্ষে ২-৪টি পরীক্ষা, সাথে ১বস্তা স্যালাইন ও কিছু ঔষধ। পরীক্ষা রিপোর্ট আসা পর্যন্ত স্যালাইন আর ঔষধ চলবে।
রিপোর্ট আসার পর আরেক ডাক্তার আসবে সে দেখে আবার অন্য পরীক্ষা দিবে। এভাবে প্রতিদিন ডাক্তার পরিবর্তন হয়, আর একটার পর একটা পরীক্ষা দেয়। আবার পরিক্ষা করাতে হুইলচেয়ারে নিয়ে গেলে ১০০টাকা আর ট্রলিতে নেওয়া লাগলে ২০০টাকা, ওয়ার্ড বয়কে দিতে হবে। আর প্রতিদিন নতুন নতুন ঔষধ যোগ হবে, আবার প্রতিদিন রোগীর সাথে দেখা করতে আসলে দারোয়ানকে খুশি করতে হবে।সব পরিক্ষা শেষে, এবার অপারেশন এর পালা, যা ওষুধ লাগবে তার থেকেও দুই গুণ বেশি ওষুধ, ডাক্তারের হাতে এনে দিতে হবে। তারপর অপারেশনে যদি রোগী মারা যায়, তাহলে টাকা এবং মানুষ সবই শেষ। আর অপারেশন যদি সাক্সেস হয়, তাহলে অপারেশন থিয়েটার বয়কে খুশি করতে হবে।দারোয়ানকে খুশি করতে হবে, এবং নার্স দিয়ে ড্রেসিং করতে হলে, নার্সদের কেউ খুশি করতে হবে। এবার রিলিস এর পালা,বাড়ি যাওয়ার সময় আবার নার্সকে খুশি করতে হবে। দারোয়ানকে খুশি করতে হবে। ওয়ার্ড বয়কে খুশি করতে হবে। সবাইকে খুশি করে, এই যদি হয় সরকারি হসপিটালের অবস্থা তাহলে গরীব অসহায় মানুষ কোথায় যাবে? সাধারণ মানুষ কি কখনোই তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে না? অসহায় মানুষ কি সারা জীবনই এরকমই ভুক্তভোগী হয়ে থাকবে? এ কেমন নিয়ম ? এর কি কোন প্রতিকার নেই? এই রকম হাজারো প্রশ্ন, ফরিদপুর জেলা এবং আশেপাশের সব জেলার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের।