রাতের আঁধারে বৃক্ষ নিধন স্থানীয়দের বাঁধা।

- আপডেট সময় : ০৫:০৩:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫ ১৫ বার পড়া হয়েছে

মো লুৎফুর রহমান রাকিব স্টাফ রিপোর্টার
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের শুয়ারখীল গ্রাম একসময় তার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পরিচিত ছিল। রাস্তার দুই ধারে সারি সারি তাল, খেজুর, মেহগনি ও কড়ই গাছ ছায়া দিত, যা গ্রামের পরিবেশকে স্নিগ্ধ ও শান্তিময় করে রাখত। কিন্তু সম্প্রতি এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে এই সবুজ সম্পদ ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে
নির্মাণ কাজের নামে একের পর এক গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামের রাস্তার পাশে নির্মিতব্য বেশ কয়েকটি ভবনের মালিক রাতের আঁধারে শ্রমিক লাগিয়ে মূল্যবান গাছগুলো নিধন করছেন। সম্প্রতি জগমোহনপুর গ্রামের সেলিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি শুয়ারখীল গ্রামে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে একটি গাছ কেটে ফেলেছেন এবং আরেকটি গাছ কাটার সময় স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পড়েন।
অভিযোগ উঠেছে, এই ব্যক্তি স্থানীয় গ্রামবাসীকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই নিজের খেয়ালখুশি মতো কাজ করছেন।
অথচ, সরকার ২০২৪ সালে বনভূমি রক্ষা এবং অবৈধ বৃক্ষ নিধন রোধে নতুন ও কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। এই আইন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত বা সরকারি জমিতে গাছ কাটার পূর্বে স্থানীয় বন বিভাগ থেকে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। অনুমতি ছাড়া গাছ কাটলে জরিমানা ৫০,০০০ টাকা থেকে ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত এবং কারাদণ্ড ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, শুয়ারখীলে গাছ কাটার এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা কেউই বন বিভাগের অনুমতি নেননি বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ বৃক্ষ নিধন চললেও স্থানীয় প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুয়ারখীল সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং অবিলম্বে অবৈধ বৃক্ষ নিধনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির সদস্যরা বলেন, “আমাদের গ্রামটি তার সবুজ প্রকৃতির জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী লোক নিজেদের ব্যক্তিগত লাভের জন্য যেভাবে গাছ কাটছে, তাতে গ্রামের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা আর নীরব থাকতে পারি না। প্রশাসনকে অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, যদি এখনই এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করা না হয়, তবে অচিরেই শুয়ারখীল তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পূর্ণরূপে হারাবে। তারা উপজেলা প্রশাসন, চৌদ্দগ্রাম এবং কুমিল্লার বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। একই সাথে, ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো গাছ কাটা না হয়, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখারও অনুরোধ জানান তারা।
এই সংবাদটি আপনারা উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন পত্রিকায় প্রেরণ করতে পারেন। আশা করি এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে এবং শুয়ারখীলের অবশিষ্ট সবুজ রক্ষা পাবে।